বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে - জানুন বিস্তারিত গাইডলাইন

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে এটা অনেকের মনেই জাগে এমন এক প্রশ্ন, যারা স্বপ্ন দেখেন সুযোগের দেশ আমেরিকায় পা রাখার। আমেরিকায় ভ্রমণ, পড়াশোনা কিংবা স্থায়ীভাবে বসবাস যে কোন উদ্দেশ্যেই হোক, খরচের পরিমাণটা আগে জানা খুব জরুরী। 
বাংলাদেশ-থেকে-আমেরিকা-যেতে-কত-টাকা-লাগে
কারণ ভিসা ফি, টিকিট , বাসস্থান ও অন্যান্য খরচ মিলে মোট বাজেটটা একেবারেই ছোট নয়। তবে সঠিক পরিকল্পনা আরেকটু বুদ্ধি খাটাতে পারলে অনেকটাই সাশ্রয় করা সম্ভব। এই লেখায় আমরা বিস্তারিত জানবো বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে এবং সেই খরচ কিভাবে কমানো যায় তার বাস্তব ধারণা।

সূচিপত্রঃবাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে এই প্রশ্নটা আজকাল অনেকের মুখে শোনা যায়, বিশেষ করে যারা পড়াশোনা , চাকরি বা ভ্রমণের স্বপ্ন নিয়ে আমেরিকায় যেতে চান। সত্যি বলতে, আমেরিকায় যাওয়ার খরচ নির্ভর করে আপনার উদ্দেশ্য , ভিসার ধরন , এবং জীবন যাত্রার পরিকল্পনার ওপর। সাধারণভাবে যদি বলা যায়, ভিসা ফি , মেডিকেল চেকআপ , ডকুমেন্ট প্রস্তুত , এবং বিমানের টিকিট সবমিলিয়ে প্রাথমিক খরচ দাঁড়াতে পারে দুই লক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার মধ্যে। 

তবে পড়াশোনার জন্য গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি ও বাসস্থান যোগ করলে খরচ অনেক বাড়ে। আর কাজের ভিসায় গেলে কিছু খরচ কমে ও যেতে পারে , কারণ কিছু ক্ষেত্রে কোম্পানি ব্যয় বহন করে।অনেকে মনে করেন , আমেরিকা যাওয়া মানেই লাখ লাখ টাকা দরকার কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে খরচ অনেকটা কমানো সম্ভব। আগে থেকেই ফ্লাইট বুক করলে, সাশ্রয়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা নিলে এবং সঠিক কাগজপত্র প্রস্তুত রাখলে ঝামেলা ও কমে, খরচ ও সাশ্রয় হয়। তাই আগে আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ভ্রমণ , পড়াশোনা নাকি স্থায়ী বসবাস তারপর বাজে তৈরি করুন সেই অনুযায়ী।

সবচেয়ে বড় কথা, অনলাইনে ভুল তথ্য দেখে বিভ্রান্ত না হয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন। কারণ বাস্তব খরচ অনেক সময় ব্যাক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন আমেরিকায় একদিন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর তাহলে এখনই শুরু করুন পরিকল্পনা কারণ সঠিক দিকনির্দেশনা আর একটু সাহসই পারে আপনার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে।

আমেরিকা ভ্রমণের মোট খরচ কত হতে পারে

আমেরিকা ভ্রমণের মোট খরচ কত হতে পারে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া মানে আপনি জীবনের এক সুন্দর অভিজ্ঞতার পরিকল্পনা করছেন। আমেরিকা ভ্রমণ শুধু একটি যাত্রা নয়, এটি এক নতুন সংস্কৃতি , আধুনিক জীবনধারা এবং বিশ্বমানের দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার সুযোগ। তবে এই স্বপ্নের ভ্রমণে যাত্রা করার আগে জানা জরুরী পুরো ট্রিপে কতটা খরচ হতে পারে। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা ভ্রমণের মোট খরচ নির্ভর করে আপনার থাকার সময়কাল , শহর নির্বাচন এবং ভ্রমণের ধরন এর ওপর।

ভিসা ফি প্রায় আঠারো হাজার থেকে বিশ হাজার টাকার মতো, আর রিটার্ন টিকিটের দাম সময় ভেদে দেড় লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে। থাকার জন্য হোটেল বা এয়ারবিএনবি ভাড়া প্রতিদিন গড়ে আশি থেকে একশো পঞ্চাশ ডলার পর্যন্ত লাগে, যা শহর অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। খাবার ও পরিবহন খরচ হিসেবে করলে প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশ থেকে একশো ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। সব মিলিয়ে, দশ দিনের আমেরিকা ভ্রমণে মোট খরচ দাঁড়াতে পারে আনুমানিক চার লক্ষ থেকে ছয় লক্ষ টাকার মধ্যে।

তবে খরচ কমানোর অনেক উপায় ও আছে যেমন আগেভাগে টিকিট বুকিং করা, ডিসকাউন্ট হোটেল ব্যবহার করা , এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ভ্রমণ করা। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট বাজেট ঠিক করে সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করেন। মনে রাখবেন, একটু বুদ্ধি ও পরিকল্পনা আপনার আমেরিকা ভ্রমণকে করতে পারে আর ও আনন্দদায়ক ও সাশ্রয়ী।

আমেরিকার ভিসা ফি ও প্রসেসিং খরচ

আমেরিকার ভিসা প্রসেসিং খরচ এই বিষয়টি জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যারা প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। অনেকেই শুধু টিকিটের খরচ নিয়েই চিন্তা করেন, কিন্তু বাস্তবে ভিসা ফি এবং প্রসেসিং চার্জই ভ্রমণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বর্তমানে আমেরিকার টুরিস্ট বা বি১/বি২ ভিসার ফি প্রায় ১৮৫ ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় বাইশ হাজার টাকার মত। কি আপনি অনলাইনে পরিশোধ করতে পারেন ভিসা আবেদন করার আগে। 

তাছাড়া ভিসা প্রসেসিং এর সাথে জড়িত আরও কিছু খরচ আছে, যেমন ডকুমেন্ট প্রস্তুত , ছবি তোলা , ফরম পূরণে সহায়তা , এবং ইন্টারভিউতে যাতায়াত ব্যয়, যা গড়ে আর ও পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকার মত হতে পারে। কেউ যদি এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করেন, তাহলে সার্ভিস চার্জ হিসেবে অতিরিক্ত কিছু টাকা গুনতে হতে পারে।তবে ভালো খবর হলো, আপনি যদি নিজে আবেদন প্রক্রিয়াটি ভালোভাবে বুঝে করেন করেন তাহলে অনেকটাই খরচ বাঁচাতে পারবেন। 

সঠিক তথ্য জেনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাজিয়ে ও ইন্টারভিউর জন্য আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রস্তুতি নিলে সফলতার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। মনে রাখবেন, ভিসা পাওয়া শুধুমাত্র ভাগ্যের বিষয় নয়, এটি সঠিক প্রস্তুতির ফলাফল। তাই একটু সচেতন ভাবে পরিকল্পনা করলে আমেরিকার ভিসা পাওয়া আর খরচ ম্যানেজ করা দুটোই সহজ হয়ে যাবে।

ফ্লাইট টিকিটের গড় দাম কত এখন

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার চিন্তা করছেন? তাহলে এই অংশ আপনার জন্য। এখন দেখা যাচ্ছে ঢাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাউন্ড ট্রিপ টিকিট সাধারণত এক হাজার একশো থেকে এক হাজার চারশো কলার এর মধ্যে পড়ে থাকে। অর্থাৎ বাংলাদেশী মুদ্রায় হলে এটি প্রায় একশো দশ হাজার থেকে একশো পঞ্চাশ হাজার টাকা বা তারও একটু বেশি হতে পারে, মুদ্রা রেট ও সময় অনুযায়ী ভ্যারায়।

শুরুতেই বুঝে রাখা ভালোঃ এই টিকিট দামের মধ্যে থাকে মূল বিমান ভাড়া, এয়ারপোর্ট চার্জ , চালান ফি এবং কিছু ক্ষেত্রে সিট সিলেকশন বা ব্যাগেজ ফি, কিন্তু সব সময় সব খরচ একেবারে একই ভাবে ধরা হয় না। যেমন, এক স্টপ বা দুই স্টপ ফ্লাইট সাধারণত সস্তা হয়, কিন্তু সময় বেশি লাগে। আরেকটি বিষয় হলো সময় সীমা ও বুকিং পর্যায়ের প্রভাব। সাধারণত যাত্রা তারিখ কাছাকাছি গেলে টিকিটের দাম বেশি হয়। বেশি আগে বুক করলে ভালো দামের সুযোগ থাকে।

এছাড়া সিজন ও গুরুত্বপূর্ণঃ ছুটি মৌসুম বা উৎসব সময় তুলনায় দাম একটু বেশি হয়। আপনি যদি সাশ্রয়ে বিমান টিকিট কাটতে চান, তাহলে পরিকল্পনা শুরু করুন আগে থেকে, কারণ তারিখে একটু নমনীয় থাকুন, এক স্টপ ফ্লাইট বিবেচনায় নিন এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন এয়ারপোর্ট অপশন খতিয়ে দেখুন। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, টিকিট ফিক্স করার আগে মুদ্রা রেট , ব্যাগেজ চার্জ ও ইন্সুরেন্স ক্লোজার সবমিলিয়ে খরচটা ভালোভাবে হিসাব করে নিন। এতে আপনার আমেরিকা ভ্রমর হবে অনেকটা প্রচুর উপভোগ্য , খরচ নিয়ন্ত্রিত ও কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা ছাড়া।

আমেরিকায় থাকার মাসিক খরচ কেমন

আমেরিকায় থাকার মাসিক খরচ কেমন এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কোন শহরে থাকছেন, কিভাবে জীবনযাপন করছেন এবং আপনার আয়ের উৎস কী। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে গেলে খরচ শহর ভেদে অনেক পার্থক্য হয়। যেমন, নিউইয়র্ক বা লস অ্যাঞ্জেলেসের মত বড় শহরে জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলক বেশি, আর টেক্সাস , হিউস্টন বা আটলান্টা শহরে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। সাধারণভাবে একজন একা মানুষের মাসিক খরচ প্রায় দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। 

ভাড়াই সবচেয়ে বড় খরচ, একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া শহর অনুযায়ী আটশো থেকে দেড় হাজার ডলারের মধ্যে। খাবারের জন্য মাসে গড়ে তিনশো থেকে ছয়শো ডলার লাগে, আর পরিবহন খরচ হতে পারে একশো থেকে দুইশো ডলার।যদি আপনি ছাত্র হন বা রুমমেট নিয়ে থাকেন তাহলে অনেকটা খরচ বাঁচানো সম্ভব। অনেকেই খাবার নিজে রান্না করে, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে বা অফ ক্যাম্পাসে থেকে খরচ কমিয়ে নেন। আমেরিকার জীবনযাত্রা মান উন্নত হলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে বাজেট ঠিক রাখা একদমই সম্ভব।

তাই আমেরিকায় যাওয়ার আগেই একটি সঠিক মাসিক বাজেট তৈরি করুন, বাসা, খাবার, ট্রান্সপোর্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচসহ। এতে আপনি আগেই বুঝে নিতে পারবেন আপনার জন্য কোন শহর সবচেয়ে উপযোগী এবং কেমন আয় প্রয়োজন স্বাচ্ছন্দে থাকার জন্য। পরিকল্পিত জীবনযাপনই পারে আপনাকে আমেরিকায় সফল ও সুন্দর জীবন দিতে।

ছাত্রদের জন্য আমেরিকা যাওয়ার মোট খরচ

ছাত্রদের জন্য আমেরিকা যাওয়ার মোট খরচ এই প্রশ্নটা প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনেই ঘুরপাক করে, যারা স্বপ্ন দেখেন যুক্তরাষ্ট্রের নামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার। আমেরিকায় পড়াশোনার সুযোগ মানেই বিশ্বমানের শিক্ষা, আধুনিক প্রযুক্তি , এবং এক উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা। তবে এই স্বপ্ন পূরণ করতে গেলে কিছু খরচের প্রস্তুতি আগে থেকেই জানা জরুরি। সাধারণভাবে, একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর জন্য আমেরিকার যাওয়ার মোট খরচ নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় , কোর্স , শহর , এবং জীবন যাত্রার ধরন এর ওপর।

গড়ে, টিউশন ফি প্রতিবছর পনের হাজার থেকে চল্লিশ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে, যা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১৭ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকার মত। এর সাথে যুক্ত হয় বাসা ভাড়া, খাবার , পরিবহন ও অন্যান্য খরচ , যা বছরে আর ও দশ হাজার থেকে পনেরো হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। ফলে মোট মিলিয়ে একজন শিক্ষার্থীর বার্ষিক খরচ দাঁড়াতে পারে পঁচিশ হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার ডলার, অর্থাৎ আনুমানিক ৩০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা।

তবে ভালো খবর হলো, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই স্কলার্শিপ , অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ ও পার্ট টাইম জবের সুযোগ থাকে, যা খরচ অনেকটাই কমিয়ে দেয়। আগেভাগে রিসার্চ করে সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বৃত্তির সুযোগ খুঁজে নিলে স্বপ্নের আমেরিকা ভ্রমণ আর দূরের কিছু নয়। তাই যারা পড়াশোনার জন্য আমেরিকা যেতে চান, তাদের উচিত আগে থেকেই আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করা। এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখা সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরিশ্রমই পারে আপনাকে কম খরচে আমেরিকায় পড়াশোনা সুযোগ এনে দিতে।
বাংলাদেশ-থেকে-আমেরিকা-যেতে-কত-টাকা-লাগে

কাজের ভিসায় আমেরিকা যেতে কত খরচ

কাজের ভিসায় আমেরিকা যেতে কত খরচ, এটা এমন একটি প্রশ্ন যা অনেক তরুণের মনে জাগে, বিশেষ করে যারা বিদেশে স্থায়ীভাবে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেন। আমেরিকা বিশ্বের অন্যতম উন্নত কর্মক্ষেত্র , যেখানে দক্ষ শ্রমিক থেকে শুরু করে আইটি , ইঞ্জিনিয়ারিং বা হেলথ সেক্টরে প্রচুর চাকরির সুযোগ রয়েছে। তবে সেখানে যেতে হলে শুধু চাকরি পেলেই হবে না, বরং ভিসা প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট খরচ সম্পর্কে ও জানা দরকার।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কাজের ভিসা আবেদন করতে ভিসা ফি লাগে একশো নব্বই ডলার, যা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় বাইশ হাজার টাকার মতো। এর সাথে যুক্ত হয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত , মেডিকেল টেস্ট , পুলিশ ক্লিয়ারেন্স , ও ভিসা ইন্টারভিউ তে যাতায়াত খরচ , যা মিলে মোট প্রাথমিক খরচ দাঁড়ায় আনুমানি চল্লিশ হাজার থেকে ষাট হাজার টাকা। তবে ভালো দিক হল, অনেক কোম্পানি কর্মীর ভিসা প্রসেসিং ও টিকিটের খরচ নিজেরাই বহন করে, বিশেষ করে স্পন্সরড জবের ক্ষেত্রে। যদি নিজের টিকিট ও থাকার ব্যয় বহন করতে হয় তাহলে অতিরিক্ত এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রস্তুত রাখা ভালো।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ভিসার জন্য আবেদন করার আগে চাকরির অফার লেটার যাচাই করাই এবং বৈধ এজেন্সি বা কোম্পানির মাধ্যমেই আবেদন করা। এতে প্রতারণার ঝুঁকি কমে এবং খরচ ও নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদি আপনি সত্যিই পরিশ্রমী ও যোগ্য হন, তাহলে কাজের বিষয় আমেরিকা যাওয়া আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। একটু সঠিক পরিকল্পনা ও সচেতনতা রাখলে স্বপ্নের আমেরিকা পাড়ি দেয়া একদমই অসম্ভব নয়।

আমেরিকা যাওয়ার আগে বাজেট পরিকল্পনা কিভাবে করবেন

আমেরিকা যাওয়ার আগে বাজেট পরিকল্পনা কিভাবে করতে হয় এই প্রশ্নের উত্তর জানা খুবই জরুরী, কারণ সঠিক বাজেট পরিকল্পনা ছাড়া আমেরিকা ভ্রমণ বা পড়াশোনার স্বপ্ন অনেক সময় ঝামেলায় পড়ে। আমেরিকা ভ্রমণ বা স্থায়ীভাবে বসবাস যে কারণেই যান না কেন আগে থেকে একটি পরিষ্কার বাজেট তৈরি করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। এতে শুধু খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকে না বরং পুরো যাত্রা হয়নি নিশ্চিত ও ঝামেলা মুক্ত।

প্রথমে আপনার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন, ভ্রমণ , পড়াশোনা , না কি কাজের জন্য যাচ্ছেন। তারপর ধাপে ধাপে খরচ গুলো ভাগ করুন , যেমন ভিসা ফি , টিকিট , থাকার খরচ , খাবার , পরিবহন এবং জরুরি ফান্ড। একটি সাধারণ বাজেট হিসেবে তিন থেকে ছয় মাসের খরচ আগেই হিসাব করে রাখলে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়তে হয় না। যারা পড়াশোনার জন্য যাচ্ছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও বাসস্থানের খরচ আগে থেকেই জেনে নিন। আর যারা কাজের জন্য যাচ্ছেন , তাদের উচিত চাকরির অফার লেটার ও কোম্পানির সাপোর্ট ক্লিয়ার ভাবে যাচাই করা।

বাজেট পরিকল্পনা করার সময় একটি ছোট" ইমারজেন্সি সেভিংস ফান্ড" রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ , যা প্রয়োজনে মেডিকেল বা অতিরিক্ত ব্যয়ে সাহায্য করবে। পাশাপাশি টিকিট বুকিং , ইন্সুরেন্স এবং মুদ্রা বিনিময়ের হার নিয়েও আগে ভাগে রিসার্চ করুন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, খরচ যত বড়ই হোক না কেন, সঠিক পরিকল্পনা ও সচেতনতা রাখলে সব কিছু সহজ হয়ে যায়। তাই যাত্রার আগে একটু সময় নিয়ে বাজে তৈরি করুন, প্রয়োজনে শিখে রাখুন, কারণ এটাই হবে আপনার সকল আমেরিকা যাত্রার প্রথম ধাপ।

ভিসা ইন্টারভিউতে যাওয়ার অতিরিক্ত খরচ কত

ভিসা ইন্টারভিউতে যাওয়ার অতিরিক্ত খরচ কত এই প্রশ্নটা অনেকের মনে আসে, বিশেষ করে যারা প্রথমবার আমেরিকার ভিসা আবেদন করছেন। অনেকে ভাবেন শুধু ভিসা ফি দিলেই সব খরচ  শেষ, কিন্তু আসলে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় আরো কিছু অতিরিক্ত ব্যয় থাকে যা আগে থেকেই জানা দরকার। এগুলো ছোট মনে হলেও মোট খরচের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। প্রথমেই বলতে হয়, ডকুমেন্ট প্রস্তুত ও প্রিন্টিং খরচ যেমন পাসপোর্ট এর কপি , ফটো , ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা ইনভাইটেশন লেটার প্রিন্ট করতে গড়ে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। এরপর আছে ছবি তোলা ও ফ্রম পূরণের ফি , যা হতে পারে আরো এক হাজার টাকা।

যদি আপনি ঢাকায় না থাকেন তাহলে ইন্টারভিউ দিতে যাতায়াত ও থাকা খরচ ধরতে হবে ,বাস , ট্রেন , বা প্লেনে আসা-যাওয়া ও হোটেলে থাকা মিলিয়ে গড়ে পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। কেউ কেউ ভিসায় এজেন্সির সহায়তা নেন, সেখানে সার্ভিস চার্জ হিসেবে আরও তিন হাজার থেকে পাচ হাজার টাকা দিতে হতে পারে। সব মিলিয়ে, ভিসা ইন্টারভিউতে অতিরিক্ত খরচ প্রায় দশ হাজার  থেকে পনেরো হাজার টাকার মধ্যে হতে পারে। তবে আপনি যদি নিজেই ফরম পূরণ করেন এবং আগেভাগে পরিকল্পনা করেন তাহলে অনেকটা খরচ বাঁচানো সম্ভব।সঠিক প্রস্তুতি নিলে ভিসা ইন্টারভিউ এর দিন মানসিক চাপও কমে যায়। তাই অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগেই ঠিকঠাক করে রাখুন। এতে সময় ও বাচবে, আর সফলভাবে ইন্টারভিউ পাশ করার সুযোগও বাড়বে।

কম খরচে আমেরিকা ভ্রমণের টিপস ও ট্রিকস

আমেরিকা ভ্রমণ অনেকের স্বপ্ন, বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে এ কথা ভাবলেই অনেকে পিছিয়ে যান। আসলে একটু পরিকল্পনা ও বুদ্ধি খাটাতে পারলে আমেরিকা ভ্রমণ ও হতে পারে অনেক সাশ্রয়ী। প্রথম টিপস হল, আগেভাগে ফ্লাইট টিকিট বুক করুন। যাত্রার তারিখের দুই থেকে তিন মাস আগে টিকিট কাটলে অনেক সময় অর্ধেক দামে ফ্লাইট পাওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, অফ- সিজন বা কম ভিড়ের সময় ভ্রমণ করুন। গ্রীষ্মকাল বা উৎসব মৌসুমে টিকিট ও ভোটেল ভাড়া বেশি থাকে, তাই শীতকাল বা মাঝামাঝি সময় বেছে নেওয়া ভালো। এছাড়া বড় শহরের ব্যয়বহুল হোটেল বাদ দিয়ে এয়ারবিএনবি বা বাজেট হোটেল ব্যবহার করলে খরচ অনেক কমে যায়।

তৃতীয় টিপস হল নিজে রান্না করা বা স্থানীয় রেস্টুরেন্টে খাওয়া। এতে খাবারের খরচ অর্ধেক হয়ে যায়। আর শহরের মধ্যে ঘোরাঘুরির জন্য ট্যাক্সির বদলে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা মেট্রো ব্যবহার করুন, এতে খরচ অনেক কমবে। চতুর্থত, ফ্রি কম খরচের টুরিস্ট স্পট ঘুরে দেখুন। আমেরিকার অনেক মিউজিয়াম , পার্ক বা ঐতিহাসিক স্থান একদম ফ্রি। আর সবশেষে, ট্রাভেল ইন্সুরেন্স নিতে ভুলবেন না , কারণ এটি আপনাকে হঠাৎ মেডিকেল বা লাগেজ সমস্যায় সুরক্ষা দেয়।সঠিক পরিকল্পনা আগে থেকে রিসার্চ আর স্মার্ট ব্যয় ব্যবস্থাপনায় পারে আপনার স্বপ্নের আমেরিকা ভ্রমণকে করতে একদম বাজেট ফ্রেন্ডলি ও উপভোগ্য। তাই চিন্তা নয় , একটু বুদ্ধি খাটিয়ে ঘুরে আসুন স্বপ্নের দেশ আমেরিকা থেকে।

আমেরিকা যাওয়ার খরচ কমানোর কার্যকর উপায়

আমেরিকায় যাওয়া অনেকের স্বপ্ন, বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে এ কথা ভাবলে অনেকেই দোটানায় পড়ে যান। আসলেই একটু পরিকল্পনা ও সঠিক তথ্য জানলে এই খরচ অনেকটাই কমানো সম্ভব। প্রথমেই যা করতে হবে, তা হলো আগেভাগে পরিকল্পনা করা। ফ্লাইট , ভিসা ও থাকার জায়গার খোঁজ আগে থেকে নিলে দাম তুলনামূলকভাবে অনেক কমে যায়। দ্বিতীয়তঃ সাশ্রয়ী ফ্লাইট বেছে নিন। সরাসরি ফ্লাইটের বদলে এক বা দুই স্টক ওভার স্লাইড নিলে টিকিটের দাম প্রায় বিশ থেকে তিরিশ পারসেন্ট পর্যন্ত কমানো যায়। তাছাড়া সপ্তাহের মাঝামাঝি দিনে ফ্লাইট নিলে দাম আরও কম থাকে।

তৃতীয় উপায় হল স্কলারশিপ, স্পন্সরশীপ বা কাজের সুযোগ খোঁজা। যারা পড়াশোনার জন্য যাচ্ছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ বা অ্যাসিস্ট্যান্ট শিপের জন্য আবেদন করুন। এতে টিউশন ফি ও থাকার খরচ অনেকটাই কমে যায়। চতুর্থত, ভিসা প্রসেসিং ও ডকুমেন্ট নিজে প্রস্তুত করুন। অপ্রয়োজনীয় এজেন্সি ফি বাঁচাতে নিজেই অনলাইনে আবেদন করলে বেশ কিছু টাকা সাশ্রয় হয়। আর যারা কাজের জন্য যাচ্ছেন, তারা চেষ্টা করুন এমন কোম্পানিতে চাকরি পেতে যারা ভিসা ও টিকিট খরচ বহন করে।সবশেষে, অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে বাজেট মেনে চলুন। ভ্রমণের আগে সব খরচ লিখে নিন এবং প্রয়োজন ছাড়া কিছুতেই অতিরিক্ত ব্যয় করবেন না। মনে রাখবেন, সচেতন পরিকল্পনা স্মার্ট সিদ্ধান্তই পারে আপনার আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্নকে অনেক সাশ্রয়ে বাস্তবে রূপ দিতে।

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার সম্পূর্ণ খরচ বিশ্লেষণ

অনেকেই স্বপ্ন দেখেন একদিন যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখার, কিন্তু প্রথমেই মাথায় আসে প্রশ্ন, পুরো যাত্রায় মোট খরচ কত হতে পারে? আসলে আমেরিকা যাওয়ার খরচ নির্ভর করে আপনি কোন উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন, ভ্রমণ , পড়াশোনা , নাকি কাজের জন্য। প্রতিটি ক্ষেত্রে খরচের হিসাব কিছুটা ভিন্ন, তাই আগেই পরিকল্পনা করা খুব জরুরী। প্রথমেই আসি ভিসা ফি ও প্রসেসিং খরচে, যা প্রায় বিশ হাজার থেকে পচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এরপর রয়েছে বিমান টিকিটের দাম , যা সময় ও এয়ারলাইন অনুযায়ী এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়। ভ্রমনের ক্ষেত্রে দশ দিনের জন্য থাকা ও খাবারের খরচ ধরলে প্রায় এক লক্ষ টাকা লেগে যেতে পারে।

অন্যদিকে, পড়াশোনার জন্য গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি বছরে গড়ে পনেরো থেকে চল্লিশ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে, সাথে যুক্ত হবে বাসা ভাড়া, খাবারও পরিবহন খরচ। যারা কাজের ভিসায় যাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে কোম্পানির যদি স্পন্সর করে তবে খরচ অনেকটাই কমে যায়। সব খরচ মিলে গড়ে একজন ব্যক্তির আমেরিকার যাওয়ার প্রাথমিক ব্যয় দাঁড়াতে পারে তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা, আর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পুরো বছরের খরচ হতে পারে তিরিশ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।তবে সুখবর হলো, স্মার্ট পরিকল্পনা , আগে থেকে টিকিট বুকিং , সাশ্রয়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা , এবং স্কলারশিপ বা স্পন্সরশিপের সুযোগ কাজে লাগালে এই খরচ অনেকটাই কমানো যায়। তাই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে নিজের উদ্দেশ্যে অনুযায়ী বাজেট তৈরি করুন। সঠিক প্রস্তুতি নিলে আমেরিকার যাওয়া আর স্বপ্ন নয়, তা হতে পারে বাস্তব অর্জন।
বাংলাদেশ-থেকে-আমেরিকা-যেতে-কত-টাকা-লাগে

উপসংহার

সবশেষে বলা যায়,  বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে তার নির্ভর করে আপনি কোন উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন এবং কিভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তার ওপর। কেউ ভ্রমণের জন্য গেলে খরচ তুলনামূলক কম, আবার পড়াশোনা বা কাজের উদ্দেশ্যে গেলে ফরজ কিছুটা বেশি হয়। ভিসা ফি, ফ্লাইট টিকিট , বাসস্থান , খাবার ও দৈনন্দিন খরচ সব মিলিয়ে একটি সঠিক বাজেট তৈরি করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে একটু পরিকল্পনা আর স্মার্ট চিন্তা খরচ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে। যেমন, আগেভাগে টিকিট বুকিং , সাশ্রয়ী হোটেল বা বাসস্থান বেছে নেওয়া , ডিসকাউন্ট অফার কাজে লাগানো এবং প্রয়োজনমতো স্কলারশিপ বা স্পন্সরশিপ খোঁজা ।

এতে আপনার যাত্রা শুধু সাশ্রয়ই নয়, আরামদায়ক ও হবে।সবচেয়ে জরুরী বিষয় হলো, সবকিছু আগে থেকে রিসার্চ করা এবং নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে তথ্য যাচাই করে নেওয়া। কারণ, একটু সচেতনতা আপনাকে অপ্রয়োজনীয় খরচ ও ঝামেলা থেকে বাঁচাতে পারে। তাই, স্বপ্ন যদি হয় আমেরিকা ভ্রমণ বা পড়াশোনা, তাহলে আজই নিজের পরিকল্পনা তৈরি করুন। সঠিক বাজেট ও প্রস্তুতি থাকলে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়া আর কল্পনা নয় , এটা হবে আপনার জীবনের এক অনন্য বাস্তব অভিজ্ঞতা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার মূল্যবান মতামত এখানে টাইপ করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url